করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ঘরে থাকুন, সুস্থ্য থাকুন। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের ব্যবহার - রূপকল্প ২০৪১

মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের ব্যবহার


আজ পৃথিবী ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ বলে গণ্য। বিজ্ঞানের ক্রম-অগ্রগতির এ সময়টিকে বিশ্বজুঁড়ে চিহ্নিত করা হচ্ছে তথ্য-প্রযুক্তির যুগ হিসেবে। বর্তমানে সামরিক বা পারমাণবিক শক্তি নয় তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সক্ষমতা দ্বারাই নির্ধারিত হচ্ছে দেশ বা রাষ্ট্রের ক্ষমতা। বিজ্ঞানের যুগ পেরিয়ে এখন আমরা প্রযুক্তির যুগে। প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার মানব সভ্যতায় আমাদের পৃথিবীটাকে ‘গ্লোবাল ফ্যামিলি’তে পরিণত করেছে। মানুষ গোটা পৃথিবীকে নিজের বশে এনেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তায়। মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ইন্টারনেট ইত্যাদির উদ্ভাবন মানব সভ্যতাকে পৌঁছে দিয়েছে ভিন্ন এক উচ্চতায়। সুশাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম পূর্ব শর্ত তথ্য ও প্রযুক্তির নিত্য ব্যবহারে বাংলাদেশও আজ এগিয়ে যাচ্ছে তার অভীষ্ট লক্ষ্যপানে।
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হয়। এ সরকারের আমলে শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল বা তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আন্দোলনের একটি অন্যতম ক্ষেত্র বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। তথ্য ও প্রযুক্তির গুরুত্ব উপলব্ধি করে আমাদের শিক্ষায় এর সফল সংযোজন ঘটিয়েছে সরকার। আমাদের শিক্ষার নানা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের শিক্ষাকে টেকসই ও মানসম্মত পর্যায়ে পৌঁছিয়ে দিতে সহায়তা করছে। ই-বুক প্রণয়ন, কম্পিউটারের মাধ্যমে পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন, শিক্ষার্থীর তথ্য সংরক্ষণ, শ্রেণি কক্ষে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহার করে ডিজিটাল কন্টেন্টের মাধ্যমে পাঠ উপস্থাপন ইত্যাদি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যুগোপযোগী ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে। বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার ম্যারাথন দৌড়ে আমাদের জাতিকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে আইসিটি শিক্ষার মাধ্যমে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ে তুলে ‘ভিশন-২০২১’ বাস্তবায়নে আইসিটি শিক্ষার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ।
শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতকরনে বিশ্বায়নের যুগে উন্নত দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও শিক্ষার প্রচলিত ধারার শিখন-শেখানো পদ্ধতির পরিবর্তে শিখন-শেখানো পদ্ধতিতে তথ্য- প্রযুক্তির সংযোগ ঘটানো হয়েছে। কম্পিউটার শিক্ষা বা ল্যাবভিত্তিক বদ্ধমূল ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তিকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে কাজে লাগানো হচ্ছে। কঠিন, দূর্বোধ্য ও বিমূর্ত বিষয়সমূহকে শিক্ষকগণ ছবি, অ্যানিমেশন ও ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সামনে সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করার মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রমকে আনন্দময় করে তোলা হচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়,
পঠন দক্ষতা উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (iCT)’র সমন্বয় ঘটানোয় প্রমিত উচ্চারণ শেখা, বোধগম্যতার উন্নয়ন, পড়ার আগ্রহ তৈরি এবং সর্বোপরি পাঠাভ্যাস সৃষ্টিতে আইসিটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের মাধ্যমে পাঠকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা, কঠিন বিষয় সহজভাবে তুলে ধরা, শিক্ষার্থীদের সহজে শিখন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা এবং সৃজনশীল প্রশ্নের অনুশীলন কার্যক্রম খুব সহজভাবেই পরিচালিত করা হচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, হৃদপিন্ড, পাকস্থলী ও ফুসফুসের কার্যপ্রণালী; উদ্ভিদের বৃদ্ধি, শ্বসন ও অঙ্কুরোদগম; প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের নানা কার্যকারণ সম্পর্ক শ্রেণিকক্ষে পড়ানোর ক্ষেত্রে ছবি, অ্যানিমেশন বা ভিডিও’র কোন বিকল্প নেই। ইংরেজী, বাংলা, সমাজ, ধর্মসহ প্রতিটি বিষয়ে শিক্ষার্থীদেরকে সুস্পষ্ট ও বৈশ্বিক ধারণা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন (A2i) প্রোগ্রামের উদ্যোগে ৭টি বিদ্যালয়ের ২৩ জন শিক্ষক নিয়ে পাইলট আকারে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম কার্যক্রম শুরু করা হয়। A2i প্রোগ্রামের সহযোগিতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সারাদেশে পঁচিশ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়।
A2i প্রোগ্রামের সহযোগিতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫৫ হাজারের বেশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। শিক্ষকগণ বিজ্ঞান, গণিত, ভূগোল, ধর্ম, বাংলা, কৃষিশিক্ষাসহ প্রতিটি বিষয়ের ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করছেন ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে ব্যবহার করছেন। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ব্যবহারের মাধ্যমে গতানুগতিক শিক্ষক-কেন্দ্রিক শিক্ষা কার্যক্রমকে শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক আনন্দময় শিক্ষায় রূপান্তর করতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম মনিটরিং ও মেইনটেনিং-এ জেলা-উপজেলা প্রশাসন, জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিস ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজ সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
২০১৩ সালে ১৫৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের একটি ইমপ্যাক্ট স্টাডির ফলাফলে দেখা যায় যে, যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের মাধ্যমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়, সেখানে শিক্ষার্থীরা ক্লাস লেসন ভালভাবে বুঝতে পারে এবং তাদের মুখস্থ বিদ্যার প্রবণতা কমেছে। এ সকল শিক্ষার্থীদের শেখার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে এবং ক্লাসে তাদের একঘেয়েমিভাবও দূর হয়েছে।
এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকগণের সাক্ষাতকার গ্রহণ করে জানা যায় যে, ইন্টারনেট সার্চ করে বিভিন্ন দেশের শিখন-শেখানো উপকরন ডাউনলোড করে নিজ সংস্কৃতি, বিষয় ও শ্রেণি উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করার মাধ্যমে শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধি পেয়েছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে তাদের আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বেড়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের সাথে খুব সাবলীলভাবে যোগাযোগ স্থাপন ও অতি সহজেই ক্লাস পরিচালনা করতে পারছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণের মতামত বিশ্লেষন করে দেখা যায় যে, এসব প্রতিষ্ঠানের ফলাফল পূর্বের থেকে ভাল হয়েছে, প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের মাত্রা বেড়েছে এবং শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন ঘটছে।
দেশের শত বছরের পুরাতন শিক্ষাদান পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটিয়ে সরকার ডিজিটাল ক্লাস রুম-এর কর্মসূচীর উদ্দেশ্য কেবল তথ্য প্রযুক্তিগত শিক্ষা নয়; বরং শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করা। প্রচলিত ধারায় শিক্ষা শিক্ষার্থীদের কাছে একটি কঠিন ও নিরস বিষয়। এ ধারায় পাঠ্যপুস্তকের বিষয়সমূহ শিক্ষকগণ শ্রেণীকক্ষে যেভাবে উপস্থাপন করেন তাতে শিক্ষার্থীরা পঠিত বিষয়ের প্রতি কিছুতেই আগ্রহী হয়ে উঠছে না। শিক্ষা-বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখা যাচ্ছে না এবং বিষয়বস্তু ঠিক মতো বোধগম্যও হচ্ছে না। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা পঠিত বিষয়কে না বুঝেই আত্মস্থ করার চেষ্টা করছে। ফলে প্রকৃত শিখনফল অর্জিত হচ্ছে না। পরীক্ষায় ফল ভালো করলেও কর্মজীবনে গিয়ে অর্জিত শিক্ষাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছে। শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজিত এই সমস্যাকে দূর করার লক্ষ্যে ডিজিটাল ক্লাসরুম একটি শুভ সূচনা। এতে শিক্ষা বিষয়টিকে শিক্ষার্থীর নিকট অনেক বেশি আনন্দময়, সহজবোধ্য করে তোলা হচ্ছে। শিক্ষা হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক।
শিক্ষার মানোন্নয়নে ‘শিক্ষকদের দ্বারা ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি’ এটুআই প্রকল্প কর্তৃক উদ্ভাবিত আরেকটি উল্লেখ করার মতো বিষয়। ডিজিটাল কনটেন্ট হলো পাঠ্যপুস্তকে বর্ণিত বিষয়কে শব্দে, ছবিতে ও গতিময়তায় উপস্থাপনের জন্য নির্মিত শিক্ষকদের তৈরি অডিও-ভিজ্যুয়াল উপকরণ। শিক্ষকগণ আগে থেকেই কম্পিউটারে পাওয়ার পয়েন্ট প্রোগ্রামে বিভিন্ন ভিডিও, অডিও, ইফেক্ট, এনিমেশন ব্যবহার করে পাঠ্যপুস্তকের কনটেন্টকে স্লাইডে রূপান্তরি করেন। পরে শ্রেণী কক্ষ্যে সেটি শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করেন। এতে পাঠ্যপুস্তকের কালো অক্ষরে বর্ণিত ঘটনা বা বিষয় শিক্ষার্থীর কাছে শব্দে, চিত্রে, গতিময়তা, ভিডিও এবং এনিমেশনের মাধ্যমে সহজেই জীবন্ত ও হৃদয়গ্রাহী হয়ে উঠছে। শিক্ষকদের তৈরি ডিজিটাল কনটেন্ট একটি বিশেষ ওয়েব সাইট এবং জাতীয় ই-তথ্যকোষে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষকগণ এ সব সাইট থেকে ডিজিটাল কনটেন্ট সংগ্রহ করে এমনকি প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পাদনা করে শ্রেণীকক্ষে ব্যবহার করতে পারেন। এ পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রযুক্তি তথা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ আজ ক্লাসে নিত্যদিনের শিক্ষাপোকরণ।
ডিজিটাল ক্লাসরুম এবং কনটেন্টের ব্যবহার আমাদের দেশে নতুন হলেও উন্নত দেশগুলোতে এর প্রচলন আগেই হয়েছে। এখন বিশ্বজুড়ে বিদ্যালয়গুলোতে শ্রেণীকক্ষে শিখন-শেখানো কার্যক্রমে ব্যাপক পরিবর্তন ও এ নিয়ে গবেষণা চলছে। এ বিষয়ে উন্নত দেশগুলো এমনকি ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো এগিয়ে থাকলেও আমাদের দেশে বাস্তবে শ্রেণী পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, শিক্ষকগণ প্রচলিত শিক্ষাদান পদ্ধতি ব্যবহার করেই শ্রেণী পাঠদান পরিচালনা করতে বেশি উৎসাহী যা শিক্ষার্থীদের মুখস্থবিদ্যার দিকেই ঠেলে দিচ্ছে।
অর্থাৎ শিক্ষকগণ শুধু পাঠ্যপুস্তক, চক, ডাস্টার, বোর্ড ব্যবহার করেই শিক্ষক-কেন্দ্রিক শ্রেণী পাঠদানে নিয়োজিত রয়েছেন। এর নানাবিধ কারণ থাকলেও মূল কারণ শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শ্রেণী কার্যক্রম সম্পর্কে শিক্ষকদের অনিহা ও অনভিজ্ঞতা। আধুনিক শিক্ষা বিজ্ঞান বলছে, শ্রেণীকক্ষের পাঠদান কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করতে না পারলে পাঠদান ফলপ্রসূ হয় না। এ জন্য শিক্ষককে বিভিন্ন কলা-কৌশল প্রয়োগ করতে হয়। শ্রেণী কার্যক্রমের শুরুতে শিক্ষক এমন কিছু উপকরণ প্রদর্শন করবেন যা শিক্ষার্থীদের জীবনঘনিষ্ঠ এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে বাস্তব বা মূর্তমান হয়। অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী আলোচনায় অংশগ্রহণ করবে এবং পাঠ শিরোনাম তারাই বের করে আনবে। শ্রেণীকক্ষে উপস্থাপিত বিষয়বস্তুর সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, সুবিধা-অসুবিধা, পার্থক্য ইত্যাদি শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বের করবে এবং তা করার জন্য শিক্ষক সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ও কৌশল প্রয়োগ করবেন। উপজেলা প্রশাসন, নাইক্ষ্যংছড়ি মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত ও আনন্দময় প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দূর্গম নাইক্ষ্যংছড়ির ৫৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। শিক্ষকদের ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরীতে প্রশিক্ষণ প্রদান, শিক্ষার্থীদের naikonsare-4মধ্যে তথ্য প্রযুক্তির প্রতি ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি, উম্মুক্ত জ্ঞানের অবাধ প্রবাহ প্রভৃতি বিষয়ে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বিদ্যুতবিহীন স্কুল সমূহে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার ও শিক্ষকদের ৩-জি সিম সম্বলিত ট্যাব প্রদান করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক সরেজমিনে বিদ্যালয় সমূহে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিদর্শন ও তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে।
আমাদের শিক্ষার্থীদের একুশ শতকের দক্ষ জনগোষ্ঠী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আর এ কাজ সম্পাদনে শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য-প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানোর কোন বিকল্প নেই। বিদ্যালয় জীবনের শুরুতে পড়ার মজবুত ভিত নিশ্চিত করার মাধ্যমে একই শ্রেণিতে শিশুর পুনরাবৃত্তি এবং প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে ঝরে পড়ার হার হ্রাস করার জন্য তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ অপরিহার্য। আধুনিক শিক্ষাবিজ্ঞানের এই প্রত্যাশা পূরণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে সত্যিকার অর্থে শিক্ষার প্রধান শক্তিশালী হাতিয়ার আইসিটি। দিনে দিনে বিজ্ঞানের প্রতি শিক্ষার্থীদের যে ভীতি বা অনাগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে; আইসিটি ব্যবহার করে ক্লাস নিতে পারলে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে।
এমডিজি অর্জনে প্রাথমিক শিক্ষায় আইসিটির ব্যবহার বাংলাদেশের ব্যাপক সাফল্য নিশ্চিত করেছে। এসডিজিতেও সরকার মান সম্মত প্রাথমিক শিক্ষার প্রতি অপরিসীম গুরুত্ব দিয়েছে এবং ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। মাঠ পর্যায়ে এ সব কার্যক্রম সফলভাবে সম্পাদনের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন নাইক্ষ্যংছড়ি সরকারের ভিশন-২০২১, ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহে দুল ইসলাম
উপজেলা নির্বাহী অফিসার
নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান।

তথ্য সূত্র:
একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ঢাকা।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা।

Related post you might see:

Share this product :

+ comments + 2 comments

November 29, 2021 at 3:39 AM

good content

December 28, 2021 at 2:51 AM

সবার এই লেখাটা পড়া উচিত।

Post a Comment

 
Support : | RSTSBD | RSTSBD
Copyright © 2017. রূপকল্প ২০৪১ - All Rights Reserved
This Blog Published by RSTSBD
Created by Uno Badalgachi