যে কোনো মূল্যে পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণে রাখতে দ্রুতই শাটডাউনের প্রজ্ঞাপন আসছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
ফরহাদ হোসেন। মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেশব্যাপী ‘শাটডাউন’
দিতে যাচ্ছে সরকার।
শুক্রবার (২৫ জুন)
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুমোদন হয়ে এলেই এই সিদ্ধান্ত
কার্যকর হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির
করা সারাদেশে ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশের বিষয়টি তুলে ধরে বলেছিলেন, সারাদেশে শাটডাউনের
প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় যে কোনো সময় সরকার তা ঘোষণা দেবে। আগের
চেয়ে বিধিনিষেধ আরও কঠোর হবে। করোনা পরিস্থিতি খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সরকার।
বৃহস্পতিবার বিকেলে
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ
স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশ কথা জানানো হয়।
বুধবার (২৩ জুন) রাতে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৩৮তম সভায় এ সুপারিশ করা হয়।সভায়
দেশে কোভিড-১৯ এর সাম্প্রতিক ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ বিষয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ ও আলোচনা
হয়।
সুপারিশে বলা হয়,
শাটডাউন চলা অবস্থায় জরুরি সেবা ছাড়া যানবাহন, অফিস-আদালতসহ সবকিছু বন্ধ রাখা প্রয়োজন।
এ ব্যবস্থা কঠোরভাবে পালন করতে না পারলে আমাদের যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেনো, সংক্রমণ
এভাবে বাড়তে থাকলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অপ্রতুল হয়ে পড়বে। শাটডাউন মানে হচ্ছে
সবকিছু বন্ধ থাকবে, শুধু জরুরি সেবা ছাড়া। অফিস-আদালত, বাজার-ঘাট, গণপরিবহণসহ সব বন্ধ
থাকবে। সবাই বাসায় থাকবে। এমনটাই জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ।তিনি বলেন,
জরুরি সেবা বলতে ওষুধ, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম ছাড়া সবকিছু দুই সপ্তাহ বন্ধ করে মানুষ
যদি এই স্যাক্রিফাইস-কষ্টটুকু মেনে নেয়, তাহলে আগামীতে ভালো হবে।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ
সহিদুল্লাহ জানান, দিল্লি এবং মুম্বাইতে শাটডাউন দিয়ে ফলাফল পেয়েছে। সেখানে ৬ সপ্তাহ
গণপরিবহন বন্ধ ছিল, এছাড়া দিল্লিতে আরও ৩ সপ্তাহ ছিল। দিল্লিতে প্রতিদিন একসময় ২৮
হাজার শনাক্ত হতেন, কিন্তু এখন সেখানে ১৫০ শনাক্ত হচ্ছেন। মৃত্যুও কমে এসেছে।
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসের
সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সারাদেশে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলছে। চলতি বছর করোনা সংক্রমণ
বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা লকডাউন
হলেও সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ‘কঠোর লকডাউন‘ ঘোষণা দেয় সরকার।পরে সিটি
করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ এবং ট্রেন
চলাচল রোজার ঈদ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। পরে ২৪ মে থেকে গণপরিবহন চলার অনুমতি দেওয়া হয়। একই
সঙ্গে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো আসন সংখ্যার অর্ধেক বসিয়ে খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।তবে
করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সারাদেশে বিধিনিষেধ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬
জুন বিধিনিষেধ এক মাস বাড়িয়েছে সরকার, যা ১৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
সূত্র: jugantor.com