আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার সুযোগ্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হুসাইন শওকত ছুটির দিন বা যেকোন দিন কাজের ফাঁকে সুযোগ পেলেই ল্যাপটপ হাতে নিয়ে ছুটে যান স্কুল, কলেজ বা মাদ্রাসায়। আর সেখানে গিয়ে মান সম্মত শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করান কোমলমতি শিশু ছাত্র-ছাত্রীদের এবং তাদের মাঝে নিজেকে উৎসর্গ করেদেন। তার ধারনা প্রাথমিক পর্যায় বা মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সুশিক্ষায় অনুপ্রানিত করতে পারলেই ভবিষ্যতে তাদের জীবন সুদৃঢ় হবে। এই মহান বিদ্যান হিতৈষী শিক্ষা প্রতিভা বিকাশের নিবেদিত প্রান। এমনই তথ্য জানাগেছে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে। জানাযায়, এই নির্বহী অফিসার বদলগাছী উপজেলায় গত ২৬/৫/১৪ ইং সালে যোগদানের পর থেকে তিনি তার নিজ উদ্দ্যোগে ও নিজের ব্যক্তিগত অর্থায়নে শুরু করেন প্রাথমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের জ্ঞান বিকাশের কুইজ প্রতিযোগীতা। এর পর শুরু হল মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে। শুধু ছাত্র-ছাত্রীরা নয় শিক্ষক শিক্ষিকাসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিক ও সুধিজনদের মধ্যে বিস্তার লাভ করে এই সাধারণ জ্ঞানের কুইর্জ প্রতিযোগীতা। এই ইউএনওর আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে শুরু করা সাধারণ জ্ঞানের কুইজ প্রতিযোগীতা নিয়ে এলাকার সুধিজনদের মধ্যে শুরু হয় নানা ইতিবাচক আলোচনা। আর ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে শুরু হয় নতুন কিছু জানার আগ্রহ। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে কৌতুহল লেগেই থাকে কবে আসবেন ইউএনও হুসাইন শওকত স্কুলে, সাধারণ জ্ঞানের কুইজ প্রতিযোগীতা নিয়ে । এই উপজেলায় বদলী হয়ে আসা ২ বছর ৫ মাস পেরিয়ে গেছে তার। ইতোমধ্যেই তার জ্ঞানের ভান্ডার নিয়ে শুরু করা সাধারণ জ্ঞানের কুইজ প্রতিযোগীতা এলাকায় সর্বমহলে ব্যাপক সারা ফেলেছে। উপজেলার ছাত্র-ছাত্রীরা সাধারণ জ্ঞানে ব্যাপক প্রসারও লাভ করেছে। প্রশ্নের সাথে সাথেই মিলে যায় উত্তর। এই দু-বছরে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের জ্ঞানের পরিধি দেখলে বিষ্মিত হতে হয়। সুত্রে জানাযায়, এই শিক্ষা অনুরাগী কর্মকর্তার জন্ম মাগুড়া জেলার শ্রীপুর উপজেলায় নোহাটা গ্রামে। এবং এই ইউএনও হুসাইন শওকত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ রাধানগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তারের ছোট ছেলে । তার মা হোসনে আরা সাত্তার। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছানাউল হাবিব জানান, ইউএনও স্যার তার নিজ তত্ত¦াবধানে সহকারী শিক্ষা অফিসারদের ১ম থেকে ৫ম শ্রেণীর সমস্ত পাঠ্য বইয়ের বিষয় বস্তু সম্পর্কে ধারনা নিতে বই পাঠে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং তাদের জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। সুযোগ পেলেই তিনি সাব-ক্লাষ্টার ট্রেনিং গুলোতে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার উপর শিক্ষকদের দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্য প্রদান করেন। এবং তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে যে সাধারণ জ্ঞানের কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে তা এক কথায় অনবদ্য। শিক্ষা ক্ষেত্রে সামগ্রিক অবদানের জন্য তিনি চালু করেছেন ইউএনও পদক। যা বিদ্যালয় সমূহের মধ্যে সৃষ্টি করেছে এক প্রতিযোগিতা। তিনি আরও বলেন ইউএনও স্যারের নির্দেশনা ক্রমে গত বছর সমাপনী পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের জন্য ৪ টি মডেল টেষ্টের আয়োজন করা হয়। এবং যার ফলশ্রতিতে গত ২০১৫ ইং সালে জিপিএ পাঁচ পেয়েছিলো ৩৬৫ জন । আর গত ২০১৪ সালে এ উপজেলায় জিপিএ পাঁচ পেয়েছিলো মাত্র ১৫৮ জন। এ বছর ইউএনও পদক প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বদলগাছী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ইউএনও স্যার এ উপজেলায় যোগদান করার পর থেকে প্রাথমিক শিক্ষার ধারাই পাল্টে গেছে। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্য বই পড়াশুনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সাধারণ জ্ঞান চর্চায় উদ্বুদ্ধ করছেন। অপরদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের মানবীয় গুনাবলী সম্পূন্ন নীতিবান মানুষ হিসাবে গড়ে উঠার দীক্ষা প্রদানে তাঁর যে প্রয়াস তা অত্যন্ত প্রসংশনীয়। বঙ্গবন্ধু সরকারি মহাবিদ্যালয় কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. ফাল্গুনী রানী চক্রবর্ত্তী বলেন, বর্তমান ইউএনও একজন ব্যতিক্রম ধর্মী মানুষ । কারণ প্রশাসনিক ব্যস্ততার মাঝেও তিনি স্বপ্ন দেখেন শিশু-কিশোর , শিক্ষার্থীদের সামগ্রীক বিকাশে গড়ে তোলার জন্য। শিক্ষা,শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাঁর ইতি বাচক চেতনা ইতিমধ্যে সর্বমহলে প্রসংশিত হয়েছে। ইউএনও হুসাইন শওকত এর সাথে আলাপকালে বলেন, তিনি তার বাবার কাছ থেকে এই উৎসাহ উদ্দীপনা পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন আমি বদলগাছী থেকে চলে যাব কিন্তু আমার অনুপ্রেরনা যাদের মাঝে থাকবে তারা ভবিষ্যতে বিসিএস সহ বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় সুনাম রাখবে বলে তিনি আশাবাদী। এরিই ধারা বাহিকতায় তাঁর ব্যক্তিগত উদ্দ্যেগে গত বৃহষ্পতিবারে বদলগাছী জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে আন্ত:স্কুল ও মাদ্রাসা পর্যায়ে চুড়ান্ত বিতর্ক প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্ক প্রতিযোগীতায় চাম্পিয়ান হয় ভান্ডারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিপাশা জান্নাত ও মোঃ আরমান হোসেন। রানার আপ কোলা বিজলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ নাহিদ হাসান ও সৌরভ হোসেন এবং মাদ্রাসা পর্যায়ে মিঠাপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জাকারিয়া ও তাহমিনা চ্যাম্পিয়ান হয়। পরে বিজয়ীদের মধ্যে পুরুস্কার বিতরণ করা হয়। কুইজ প্রতিযোগীতার প্রশ্ন উপস্থাপন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুসাইন শওকত নিজেই। কুইজ প্রতিযোগীতায় উপজেলার সর্বমোট ৫০টি স্কুল ও মাদ্রাসা অংশ গ্রহণ করে।
Labels:
শিক্ষার মান উন্নয়ন
Post a Comment